একাধিকবার ভোটার হলে করণীয়
সর্বপ্রথম ২০০৮ সালে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে লিমিনেটিং ভোটার আইডি কার্ড প্রদান করা শুরু করে, ওই সময়ে অনেকেই নতুন ভোটার নিবন্ধিত হয়েছিল তবে অনেকের ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে যাওয়ায় তারা পুনরায় ভুলবশত ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করেছে। দ্বিতীয়বার ভোটার আবেদন করার জন্য তাদের আবেদনটি ব্লক করে দেওয়া হয়েছে এবং পূর্বের যে ভোটার আইডি কার্ড ছিল সেটি বাতিল করা হয়েছে নির্বাচন অফিস থেকে। তবে জানার বিষয় হলো একাধিক ভোটার হলে করণীয় কি, কিভাবে এটি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে এবং একাধিকবার ভোটার হওয়ার শাস্তির বিধান কি রয়েছে।
যদি ভুলবশত এটা লিখবার ভোটার হয়ে থাকেন তাহলে যত দ্রুত সম্ভব আপনার দ্বিতীয় রেজিস্ট্রেশন হওয়া এনআইডি কার্ডটি বাতিল করতে হবে। অন্যতায় আপনার বিরুদ্ধে ভোট জালিয়াতি মামলায় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। আপনি যদি দ্বৈত ভোটার আবেদন করে থাকেন সে ক্ষেত্রে আপনার পূর্বের ভোটার আইডি কার্ডটি ব্লক করে দেওয়া হয় অর্থাৎ এক্ষেত্রে আপনি এনআইডি দিয়ে সরকারি বেসরকারি কোন সেবা গ্রহণ করতে পারবেন না।
দ্বৈত ভোটার আবেদন কেন হয়?
অনেকে আবেগে বশবর্তী হয়ে অথবা ভুলের বছর ভর্তি হয়ে দ্বৈত ভোটার আবেদন করে। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেকে চিন্তা করে এনআইডি কার্ড হারিয়ে গেছে তাই নতুন করে ভোটার আবেদন করে। আবার অনেকেই জালিয়াতি করার উদ্দেশ্যে দ্বৈত ভোটার আবেদন করে থাকে, এবং ভোটার আইডি কার্ড ক্লোনিং/ কপি ইত্যাদি কার্যক্রম করে থাকে।
এছাড়াও অনেকে প্রথমবার ভোটার রেজিস্ট্রেশন হওয়ার পরে যদি এনআইডি কার্ড আসতে দেরি হয় কিংবা ভুলক্রমে হারিয়ে ফেলে অথবা আমাদের জন্ম নিবন্ধন/সার্টিফিকেটের সাথে এনআইডি কার্ডের কোন তথ্য মিল না থাকে তাহলে দ্বিতীয়বার ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করে।
এবং দ্বিতীয়বার ভোটার হয়ে চলে আসে, কিন্তু যখন আমরা দ্বিতীয়বার ভোটার হয় তখন বাংলাদেশ সরকার জাতীয় পরিচয় পত্র ওয়েবসাইটের ডাটাবেজে থাকা প্রথমবার রেজিস্ট্রেশনকৃত তথ্যের সাথে মিলে যায়।
কেননা ২০১৬ সালের পর থেকে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন জাতীয় পরিচয় পত্র ওয়েবসাইটের ডাটাবেজে সকল নাগরিকের তথ্য সংরক্ষণ করা হয় তাই একই তথ্য পুনরায় সাবমিট করার কোন সুযোগ নেই।
যদি আমরা দ্বিতীয়বার একই তথ্য সাবমিট করি তাহলে নির্বাচন কমিশন এটি অপরাধ হিসেবে ধরেনেয়। পরবর্তীতে আমাদের সকল এনআইডি কার্ডগুলো ব্লক করে দেয়।
দ্বৈত ভোটার হওয়ার শাস্তি
ইচ্ছাকৃতভাবে দ্বৈত ভোটার হওয়া অপরাধ। শাস্তি অনেক কঠিন। তার বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল মামলা হবে। ভোটার তালিকা থেকে নাম কাটা যাবে। পাশাপাশি জেল খাটতে হবে। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে তার সমস্ত এনআইডি কার্ড নির্বাচন কমিশন দপ্তর থেকে ব্লক করে দেওয়া হবে যার কারণে সে সরকারি বেসরকারি কোন ধরনের সেবাই গ্রহন করতে পারবে না, আর আমরা জানি সকলেই সকল ধরনের সেবার নিতে হলে এনআইডি কার্ডের দরকার হয়। তাই আমরা সবসময় দ্বৈত ভোটার হাওয়া থেকে বিরত থাকবো।
একাধিকবার ভোটার হলে করণীয়
কারো অসাবধানতাবশত যদি দ্বৈত বা একাধিকবার ভোটার আবেদন হয়ে যায় সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী ক্ষমা চেয়ে একটি আবেদন পত্র নির্বাচন কমিশন বরাবর প্রেরণ করতে হবে, উক্ত আবেদনপত্রে উল্লেখ করতে হবে দ্বৈত ভোটার আবেদনের কারণ, আবেদনের ফরম নাম্বার, নিজের নাম পিতার নাম এবং নিজের ঠিকানা। এ বিষয়ে তথ্য গ্রহণ করার জন্য ১০৫ নম্বরে কল করতে পারেন
যদি আপনি আপনার ভুল স্বীকার করে আবেদনটি প্রেরণ করতে পারেন তাহলে হয়তো বা আপনার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন করতে কোন আইন অনুগ ব্য ব্যবস্থা নেওয়া নাও হতে পারে। তাই সবসময় সতর্ক থাকুন এবং চিহ্নিত করুন আপনার আশেপাশে কে বা কারা দ্বৈত ভোটার আবেদন করে।
সর্বশেষ গত ২ মার্চ ইসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১১ কোটি ৩২ লাখ ৮৭ হাজার ১০ জন ভোটার রয়েছে। এরমধ্যে ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৯ জন পুরুষ, ৫ কোটি ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ২৭ জন নারী এবং ৪৫৪ জন হিজড়া ভোটার রয়েছেন।